মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রা পেতে সারা বাংলার মানুষ যখন স্থবির। তখন মানুষের কিছু কার্যক্রম দেখে মনে পরে গেল কেনিয়ার গাছবন্ধু নোবেলবিজয়ী ওয়াঙ্গারি মাথাই এর একটি গল্প। “বনে আগুন লেগেছে। বাঘ-সিংহরা অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। ছোট্ট টুনটুনি কিন্তু ঝরনা থেকে ঠোঁটে একফোঁটা করে পানি এনে আগুনে ঢালছে। সবাই তাকে বলছে, ফালতু কাজটা থামা। টুনটুনি কিন্তু থামে না। বলে, ‘আমার যতটুকু সামর্থ্য, আমি ততটুকুই করছি! বাংলাদেশে আজ বনে আগুন লাগারমত অবস্থা। বাংলাদেশের এই অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসছেন না এনজিওগুলো। টুনটুনি মার্কা মানুষ গুলোর কর্মকান্ড নিয়ে মাঝেমধ্যে সমালোচনাও করছেন তারা। এর পরেও তারা থেমে যায়নি। অব্যাহত রেখেছেন তাদের সহোয়োগিতা।
সরেজমিনে দেখাগেছে, করোনা ভাইরাসের প্রর্দুভাবে ঘরবন্ধি শ্রমজিবী মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছেন এলাকার কিছু সাধারন মানুষ। তবে এগিয়ে আসছেন না বড় বড় নেতা ও ব্যাবসায়িরা। এছাড়াও এনজিও বহুল আগৈলঝাড়ায় দেশের এমন ক্রান্তিলগ্নে এগিয়ে আসেনি কোন এনজিও। বিতরন করেননি হাত ধোয়ার মত একটিও সাবান।
উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে জানাগেছে, উপজেলায় ৩৪টি নিবন্ধনকৃত এনজিও রয়েছে। তবে বেসরকারী হিসেবে এনজিও’র সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে জানা গেছে। এসকল এনজিও’র বেশীরভাগই ঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশসহ বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়ন খাতে কাজ করার পাশাপাশি প্রায় সকল এনজিও জনসচেতনতার উপর কাজ করার দাবি করে আসছে। তাছাড়া সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধিত শতাধিক সমিতি’র পক্ষ থেকেও সচেতনতার কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা থাকলে দাতা দেশের অর্থায়নে পরিচালিত এনজিও গুলো অবহেলিত জনপদে সুবিধাবঞ্চিত জনগনের পাশে দাড়ানোর কথা বলে তাদের সুবিধা আদায় ও বিভিন্ন জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করার কথা থাকলেও তা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সরকারী ও দাতা দেশের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের সিংহভাগই ব্যায় দেখানো হয় সচেতনতা, উদ্বুদ্ধ করন, অবহিতকরণ যে নামেই বলা হোক না কেন প্রধানত বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণকে ঘিরে। বাস্তবে তাদের এসকল সমাজসেবার সচেতনতার কার্যক্রমের পরিধি অত্যন্ত নগন্য। আবার মাঝে মধ্যে কোথাও কোন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলে তা ব্যাপক আকার দেখিয়ে মিডিয়ায় প্রচারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সংশ্লিস্ট এনজিওগুলো। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রকাশিত ওই সকল সংবাদ তাদের অফিস বোর্ডে টাঙ্গিয়ে রাখা হয় সযন্তে। আবার ওই সংবাদ পাঠিয়ে দেয়া হয় তাদের স্ব-স্ব দাতা দেশের কাছে।
বিশ্বে মরনঘাতি জীবানুবাহী রোগ হিসেবে এখন করোনা ভাইরাস অন্যতম। স্বাস্থ্য ও সচেতনতার উপর যেসকল এনজিও কাজ করছেন তাদের কাছে করোনা ভাইতরাসের প্রচারণার কোন তাগিদ চোখে দেখা যায়নি। তাদের বরাদ্দকৃত অর্থ যায় কোথায় ? আইন অনুয়ায়ি সরকারের কাছে এনজিওদের জবাবদিহীতার জায়গা ক্ষিন, তাই নিজেদের ফান্ড না থাকলেও বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে তাদের অন্য ফান্ড থেকে হলেও মরনব্যাধি করোনা ভাইরাসের মত জীবানুবাহী ভয়াবহ রোগের জন্য সতেতনতা বাড়াতে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায় গত ৮ মার্চ। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে রাষ্ট্রীয় ভাবে ঘোষনা করা হয়। ১২ এপ্রিল রবিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের ঘোষনা অনুযায়ী এ প্রর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৬২১জন। আক্রান্ত রোগি মারাগেছে ৩৪ জন।
বাংলাদেশের প্রায় ১কোটি মানুষ বিদেশে কাজ করে। তাদের মধ্যে হয়তো করোনা ভাইরাস থাকতে পারে। পার্শবর্তী দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশ অনেক নিরাপদ। তবে সরকারের বিভিন্ন উদ্দ্যোগে সামাজিক অনুশাসন, ধর্মীয় মূল্যবোধ থাকতে হবে এজন্য প্রয়োজন করোনা বিষয়ে যথেষ্ট গনসচেতনতা।
আগৈলঝাড়া উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি পারুল মন্ডল জানান, জনসচেতনতার উপর কোন বরাদ্ধ না থাকায় জনসচেতনতা মুলককোন কাজ করছেনা তারা। তবে ১২ এপ্রিল রবিবার ৮টি এজিও মিলে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সুশান্ত বালা’র কাছে ১০০ পরিবারের জন্য ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১কেজি ডাল,ও একটি সাবান দেওয়া হয়েছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক কাজল দাস গুপ্ত জানান, সমন্বয় পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২৬টি। এর মধ্যে উদ্বুদ্ধকরন ও জনসচেতনতার উপর কতটি এনজিও কাজ করছে তা তিনি জানেন না। করোনা ভাইরাসের কারনে ঘরমুখি দিনমুজুর ও অসহায় দুস্থ্য মানুষের পাশে কোন এনজিও দাড়িয়েছে কিনা তাও তিনি জানেনা তিনি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শুশান্ত বালা জানান, এনজিও সমন্বয় পরিষদ থেকে ১২ এপ্রিল রবিবার ৮টি এজিও মিলে আমার কাছে ১০০ পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে চাল, ২ কেজি আলু, ১কেজি ডাল,ও একটি সাবান দেওয়া হয়েছে। তা উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।